দুসপ্তাহ পরেই ফ্রেঞ্চ ওপেন। বছরের দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্লাম শুরুর আগে রাফায়েল নাদাল জানিয়ে দিলেন তাঁর কাছ থেকে লাল দুর্গের দখল নেওয়া সহজ হবে না। রোববার রাতে ক্লে কোর্টের অন্যতম বড় টুর্নামেন্ট রোম মাস্টার্সের ফাইনালে পুরুষ টেনিসের এক নম্বর খেলোয়াড় নোভাক জোকোভিচকে হারিয়েছেন স্প্যানিশ মহাতারকা।
সবচেয়ে বেশি গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের রেকর্ডে আরেক কিংবদন্তি রজার ফেদেরারের পাশে বসা নাদাল রোম মাস্টার্স হিসেবে বেশি পরিচিত ইতালিয়ান ওপেনটা জিতলেন ১০ম বারের মতো। তাতে এটিপির ১০০০ মাস্টার্স জয়ে জোকোভিচের রেকর্ডে ভাগ বসালেন নাদাল। মর্যাদায় গ্র্যান্ড স্লামের ঠিক পরেই থাকা মাস্টার্স টুর্নামেন্ট দুজন জিতেছেন ৩৬টি করে।
নাদাল–জোকোভিচের ৫৭তম লড়াইয়ে নাদাল জিতেছেন ৭–৫, ১–৬, ৬–৩ গেমে। জোকোভিচের বিপক্ষে ২৮তম জয়টি নাদাল পেয়েছেন ২ ঘণ্টা ৪৯ মিনিট লড়াই শেষে। এই ম্যাচের আগে নাদাল–জোকোভিচ সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছিলেন গত বছরের ফ্রেঞ্চ ওপেনের ফাইনালে। সেই ম্যাচে সরাসরি সেটে জিতেছিলেন নাদাল। প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বীর বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচ জেতার পরও অবশ্য ২৯–২৮ ম্যাচে পিছিয়ে আছেন ৩৪ বছর বয়সী নাদাল।
নাদাল কিছু দিন আগে বলেছিলেন টেনিসের ‘বড়’ তিন তারকা ‘বুড়ো’ হয়ে গেছেন। নাদালের এই দাবি মানেননি জোকভিচ। শনিবার রোম মাস্টার্সের সেমিফাইনাল জেতার পর জোকোভিচ বলেন নাদালের কথা মানেন না তিনি। কিন্তু এক দিন পর ফাইনালে এক বছরের বড় নাদালের কাছেই হেরে গেলেন ১৮ বারের গ্র্যান্ড স্লাম এককজয়ী জোকোভিচ।
দুই ‘বুড়ো’র লড়াইয়ে জেতার পর ট্রফি হাতে ওঠানোর পর নাদাল বললেন এত দূর আসতে পারবেন ভাবেননি কখনো, ‘অবিশ্বাস্য, এই ট্রফিটা ১০ম বারের মতো হাতে তুললাম। এতটা কল্পনাতেও ছিল না। মনে আছে ২০০৫ সালে যখন প্রথম রোমে ট্রফি জিতলাম (গিয়ের্মো) কোরেয়াকে হারাতে পাঁচ ঘণ্টা লেগেছিল।’
রোম মাস্টার্সের সর্বশেষ ১৭ আসরের ১৫টিতেই চ্যাম্পিয়নের নাম হয় নাদাল, নয় জোকোভিচ। শিরোপা জেতায় ১০–৫ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা নাদাল রোমের ফাইনালেও এগিয়ে জোকোভিচের বিপক্ষে। দুজনের ছয়টি ফাইনালের চারটিতেই জয়ীর নাম রাফায়েল নাদাল।
এবার জোকোভিচকে হারানোর পর নাদাল জানালেন রোমে সাফল্য পেতে কতটা মরিয়া ছিলেন তিনি। গতবার আর্জেন্টাইন দিয়েগো সোয়ার্টজমানের কাছে কোয়ার্টার ফাইনালে হেরেই বিদায় নিয়েছিলেন নাদাল। এবার প্রায়শ্চিত্ত করলেন সেটিরই, ‘আমি এখানে শিরোপা জিততে মুখিয়ে ছিলাম। আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিরোপা তো এটিই। আমি মন্টে কার্লো, বার্সেলোনা ও রোলাঁ গারোর (ফ্রেঞ্চ ওপেন) পর এখানেও সংখ্যাটা দুই অঙ্কে নিতে চেয়েছি।’
ফাইনালে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে প্রথম সেটটা জেতেন নাদাল। দ্বিতীয় সেটে অবশ্য একতরফা খেলে জিতে যান জোকোভিচ। তৃতীয় সেটে আর পেরে ওঠেননি জোকোভিচ। ৩৩ বছর বয়সী তারকা যেন হেরে গেলেন ক্লান্তির কাছেই। শনিবার প্রায় পাঁচ ঘণ্টা কোর্ট ছিলেন জোকোভিচ। বৃষ্টির কারণে পিছিয়ে যাওয়া কোয়ার্টার ফাইনালের পর সেমিফাইনালটাও সেদিন খেলতে হয়েছে ‘জোকার’ জোকোভিচকে।