ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি—এর আগে বিশ্বকাপে কখনোই ভারতের বিপক্ষে জিততে পারেনি পাকিস্তান। এবার সেই আক্ষেপ মেটাল তারা। চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতকে ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে নতুন ইতিহাস গড়ল পাকিস্তান। বিশ্বকাপে প্রথমবার ভারতের বিপক্ষে জয়ের কীর্তি গড়ল বাবর আজমের দল।
রোববার দুবাইতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৫১ রান গড়ে ভারত। জবাব দিতে নেমে ১৭.৫ ওভারে জয় তুলে নেয় পাকিস্তান।
বিশ্বকাপের মঞ্চে এটাই ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের প্রথম জয়। কোনো ফরম্যাটের বিশ্বকাপেই এর আগে ভারতকে হারাতে পারেনি তারা। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিলে ভারতের সঙ্গে ১২ দেখায় পাকিস্তান এর আগে একটিও জেতেনি। এবার সেই পরিসংখ্যান বদলে ভারতকে হারানোর কীর্তি গড়লেন রিজওয়ান-বাবররা।
জয়ের জন্য পাকিস্তানের সামনে বড় লক্ষ্য দিতে পারেনি ভারত। জিততে পাকিস্তানের দরকার ছিল ১৫২ রান। এই রান তাড়া করতে নেমে বেশ সাবধানী শুরু করে পাকিস্তান। সতর্কভাবে শুরু থেকে পাকিস্তানকে এগিয়ে নেন অধিনায়ক বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। কোনো উইকেট না হারিয়েই রিজওয়ানের সঙ্গে ১০৭ বলে ১৫২ রানের জুটি গড়েন বাবর। যে জুটিতে ইতিহাস গড়া জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় পাকিস্তান।
ভারতীয় বোলাররা কোনোভাবেই পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি বাবর-রিজওয়ানকে। উল্টো দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দলকে বিশাল ব্যবধানের জয় উপহার দেন দুই পাকিস্তানি ওপেনার। দলের জয়ের দিনের অধিনায়ক বাবর ৬৮ রানের চমৎকার ইনিংস খেলেছেন। ৫২ বলে তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ছয় বাউন্ডারি ও দুই ছক্কায়। তার সঙ্গে ৫৫ বলে ৭৯ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান।
দুবাইতে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে যায় ভারত। প্রথম ওভারে চতুর্থ বলেই রোহিত শর্মাকে এলবির ফাঁদে ফেলেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। রানের খাতাও খুলতে পারেননি ভারতীয় ওপেনার। দলীয় এক রানে প্রথম উইকেট হারায় ভারত।
নিজের দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে ফের ভারতের ব্যাটিং নাড়িয়ে দেন আফ্রিদি। এবার বোল্ড করেন লোকেশ রাহুলকে। দলীয় ৬ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ভারত।
সূর্যকুমার যাদবকে নিয়ে সেই চাপ সামলানোর চেষ্টা করেন বিরাট কোহলি। কিন্তু ওই জুটিও স্থায়ী হয়নি। বোলিংয়ে এসেই ওই জুটি ভাঙেন হাসান আলী। ১১ রানে নিজের প্রথম শিকার বানান যাদবকে। ২৫ রানে ভাঙে ভারতের তৃতীয় জুটি।
সতীর্থরা আসা-যাওয়ার মিছিলে থাকলেও টিকে ছিলেন কোহলি। একাই দলকে টেনে নেন তিনি। রানের গতিও সচল রাখার চেষ্টা করেন। তাকে সঙ্গ দেন পন্ত। এই জুটিতে কিছুটা চাপ কাটায় ভারত। এই জুটিতে স্কোরবোর্ডে ৫৩ রান যোগ করে ভারত। ১৩তম ওভারে শাদাব খান থামান পন্তকে। নিজের বলে নিজেই ক্যাচ দিয়ে ফিরিয়ে দেন পন্তকে। ৩০ বলে ৩৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন পন্ত।
পন্ত ফিরলেও উইকেটে থিতু হয়ে যান কোহলি। উইকেটে লড়াই করেন তিনি। তার ব্যাটে চড়ে পাকিস্তানকে ১৫২ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দেয় ভারত। ৪৯ বলে ৫৭ রান করেন ভারতীয় অধিনায়ক কোহলি।
পাকিস্তানের হয়ে বল হাতে ৩১ রানে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন আফ্রিদি। ৪৪ রান খরচায় এক উইকেট নেন হাসান আলী। ২২ রান দিয়ে সমান একটি নেন শাদাব খান।