আফগানিস্তানের কাবুল দখলের পরই এই কারাগারের ভেতরে থাকা সব কয়েদিকে ছেড়ে দিয়েছে তালেবানরা। কাবুল শহরের পূর্ব উপকণ্ঠে পুল-ই-চরখি নামের কমপ্লেক্সই ছিল আফগানিস্তানের একটি বিখ্যাত কারাগার।
পুল-ই-চরখির একটি দীর্ঘ, বিরক্তিকর সহিংসতা, গণহত্যা এবং নির্যাতনের ইতিহাস রয়েছে। ১৯৭০ থেকে ১৯৮০ সময়ের মধ্যে সোভিয়েত-সমর্থিত সরকার কর্তৃক এটি নির্যাতনের সেল হিসাবে খোলা হয়েছিল।
মার্কিন সমর্থিত সরকারের অধীনে, এটির অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। ৫ হাজার বন্দির জায়গা থাকলেও এতে গাদাগাদি অবস্থায় ১০ হাজারের বেশি কয়েদি রাখা হয়েছিল।
এক সময় এই কারাগারের তালেবান বন্দিরা প্রায়ই গালিগালাজ ও মারধরের অভিযোগ করত কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। রীতিমতো দাঙ্গা বেঁধে যেত কয়েদিদের মধ্যে।
গত ১৫ আগস্টের পর আমূল বদলে গেছে দৃশ্যপট। কারাগারের সেই কয়েদিরাই এখন এই কারাগারের দায়িত্বে। খবর আল আরাবিয়ার।
খবরে বলা হয়, ভেতরে কয়েদির সংখ্য খুবই অল্প। এখন যারা রয়েছেন, এদের মাদকাসক্তি এবং অন্যান্য অপরাধে এ ক’দিনে ভেতরে ঢুকিয়েছে তালেবানরাই। বাইরে যারা সরকারি রক্ষীর দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের অনেকেই এই কয়েদখানার একসময়কার বন্দি। সরকারি রক্ষীরা পালিয়ে গেছে। প্রতিশোধের আগুনে পোড়ার ভয়ে আর ফেরেনি তারা।
একসময় হাজার হাজার তালেবান বন্দি ছিল এই কারাগারে। ঘানি সরকারের লোকজন তাদের গ্রেফতার করে একে একে কাবুলের প্রধান এই কারাগারটিতে। সোমবার, একজন তালেবান কমান্ডার তার ফাঁকা হলো এবং সেল ব্লক পায়চারী করছিলেন, আর স্মৃতিচারণ করছিলেন-তাকে কোথায় রাখা হয়েছিল। কয়েক ডজন তালেবান যোদ্ধা এখন এটি পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমান্ডার তার স্মৃতিচারণে বলেন, ‘আমাকে কুনার প্রদেশে গ্রেফতার করে চোখ বেঁধে এখানে রাখা হয়েছিল। সেই দিনগুলোর কথা মনে করলে আজও আঁতকে উঠি।’ ১৪ মাস পর কারাগার থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমার খুব ভালো লাগছে, আমি মুক্ত এবং নির্ভয়ে এখানে দায়িত্ব পালন করছি।’