টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার দাপনজর ওয়াটার গার্ডেন ও স্পা সেন্টারের বাউন্ডারির ভেতরেই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।
একই গেট ব্যবহার করে একই রাস্তা দিয়ে নারী-পুরুষ স্পা সেন্টারে যাচ্ছেন। আবার একই সময় স্কুলগামী কিশোরীরাও স্কুলে প্রবেশ করছে। এতে হতাশা আর আতংকিত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিবাবকরা। দ্রুত স্কুলের জন্য আলাদা বাউন্ডারি ও গেট নির্মাণের দাবী তাদের।
জানা যায়, ১৯৯২ সালে স্থানীয় প্রভাবশালী আখতার হামিদ মাসুদ, তার ছোট ভাই আহসান হাবিব এবং তাদের বন্ধু নরওয়ের এক নাগরিক; তিনজনের অর্থায়নে মার্থা লিডস্ট্রিম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন।
স্কুলটিতে উপজেলার দাপনজর ও আশপাশের গ্রামের প্রায় আড়াই শতাধিক উঠতি বয়সী কিশোরীরা পড়ালেখা করছেন। এদিকে স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা স্কুল নির্মাণের কিছু দিন পরেই স্কুলের পাশে বিশাল জায়গা নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে ওয়াটার গার্ডেন ও স্পা সেন্টার নির্মাণ করেন এবং স্কুলের গেট ব্যবহার করে গত বছর থেকে ওয়াটার গার্ডেন ও স্পা সেন্টারটি চালু করেছেন।
একই গেট দিয়ে বিভিন্ন জায়গার তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন বয়সী নারী পুরুষ বিনোদন করতে এই স্পা সেন্টারে যাচ্ছে আবার একই সাথে উঠতি বয়সী শিক্ষার্থীরা স্কুলে প্রবেশ করছে। ফলে কে কোথায় যাচ্ছে সেটি বুঝার কোনো উপায় নেই। অনেক সময় এসব উঠতি বয়সী শিক্ষার্থীরা একই সাথে চলাচল করতে ইভটিজিংসহ নানা রকমের বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকারও হচ্ছে। ফলে এসব শিক্ষার্থীরা যে কোনো মুহূর্তে বিপদগামী হওয়াসহ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে পারে বলেও মনে করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় অভিভাবকরা। সে কারণেই দ্রুত স্কুলের বাউন্ডারিসহ পৃথক গেট নির্মাণ করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তাদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় লোকজন জানান, রিসোর্ট ও স্পা সেন্টারের মালিকরা স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় কেউই কিছু বলার সাহস রাখেন না। রিসোর্ট ও স্পা সেন্টারে বিভিন্ন এলাকার নানা বয়সী নারী-পুরুষ ফুর্তি করতে আসেন। একই গেট একই রাস্তায় কিশোরী মেয়েরা স্কুলে যায় এটা কোনোভাবে কাম্য হতে পারেনা। এতে যে কোনো মুহূর্তে এসব কিশোরী শিক্ষার্থীরা পথভ্রষ্ট হতে পারে, ইভটিজিংয়ের শিকার হতে পারে। গ্রামের ভিতর এমন একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান কোনভাবেই কাম্য নয়। দ্রুত স্কুলের গেট ও বাউন্ডারি পৃথক করে এসব শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি তাদের।
এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মানছির রহমান নিজেও হতাশা আর উৎকন্ঠা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, যে কোনো মুহূর্তে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। দ্রুত সময়ের মধ্যে স্কুলের বাউন্ডারি ও গেট পৃথক করতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক ড. আতাউল গনি জানান, রিসোর্ট ও স্পা সেন্টারের ভিতরে একই সাথে বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এতে শিক্ষার্থীদের নিরপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। ইভটিজিংসহ নানা রকমের সমস্যার সৃষ্টি হবে। একই সাথে বিষয়টি দৃষ্টিকটুও, তাই যত দ্রুত সম্ভব স্কুলের জন্য আলাদা গেট ও বাউন্ডারি তৈরি করতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়াসহ প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।